সারা দেশে ইন্টারনেট অর্ন্তভূক্তি বাড়াতে এবং দেশীয় ইন্টারনেট ভিত্তিক পণ্য ও সেবার প্রসারে আগামী ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট সপ্তাহ-২০১৫।’ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরেমশন সার্ভিসেস (বেসিস), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং গ্রামীণফোনের যৌথ আয়োজনে ঢাকা, রাজশাহী, সিলেটে বড় তিনটি এক্সপোসহ দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় একযোগে পালিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ এই ইন্টারনেট উৎসব। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স কম্পানি, মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান, ওয়েব পোর্টাল, ডিভাইস কোম্পানিসহ ইন্টারনেটভিত্তিক পণ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। থাকবে নানা আয়োজন। সফলভাবে এই মেলা আয়োজনে প্রতিটি উপজেলা আইসিটি ফোকাল পারসনের দক্ষতা বাড়াতে আজ (রবিবার) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ইন্টারনেট লিডারশীপ কর্মশালা।’
দেশের তৃণমূল থেকে আসা ভবিষ্যতের এই ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের মহাসম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইসিটি অনুবিভাগ) হারুনুর রশিদ, বেসিসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের আহ্বায়ক রাসেল টি আহমেদ, গ্রামীণফোনের পরিচালক (বিপণন) নেহাল আহমেদ ও বেসিসের পরিচালক আশ্রাফ আবির। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপ-সচিব বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল, নির্বাহী পরিচালক সামি আহমেদ, গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর (স্টেকহোল্ডার রিলেশনস) ইশতিয়াক হুসেন চৌধুরী, জেনারেল ম্যানেজার আজিজুল আবেদীন, ডেপুটি ডিরেক্টর (মার্কেটিং) তাহমিদ আজিজুল হক, তোবারক হোসেন মো. ফারাজী, মার্কেটিং কমার্শিয়াল তন্ময় বাশার, মার্কেটিং কমার্শিয়াল মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি জুনাইদ আহমেদ পলক বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রতিনিধিদের ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট উইক সফলভাবে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, একসঙ্গে প্রায় ৪৮৭টি জায়গায় এ ধরণের আয়োজনের নজির নেই। তাই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আয়োজিত এই বৃহৎ উৎসবকে অবশ্যই সফল করতে হবে। এক্ষেত্রে আইসিটি বিভাগ, বেসিস ও গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইসিটি অনুবিভাগ) হারুনুর রশিদ বলেন, ইতিমধ্যেই ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট উইক পালনের জন্য বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজকের কর্মশালার মাধ্যমে এই উৎসব আয়োজনের গতি ত্বরান্বিত হবে।
বেসিসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের আহ্বায়ক রাসেল টি আহমেদ বলেন, বেসিসের ওয়ান বাংলাদেশ ভিশনের অন্যতম লক্ষ্য বছরে এক কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তৈরিতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই কর্মশালার মাধ্যমে অংশগ্রহনকারীদের দক্ষ কমিউনিটি ইন্টারনেট লিডার হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা থাকবে।
গ্রামীণফোনের পরিচালক (বিপণন) নেহাল আহমেদ বলেন, গ্রামীণফোন তার ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষের মাঝে ইন্টারনেট স¤পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে। আজকের এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তৃণমূলে দেশের বৃহত্তম এই ইন্টারনেট উৎসবকে সফল করে তুলতে প্রতিটি উপজেলা থেকে একজন আইসিটি ফোকাল পারসনকে নিয়ে দিনব্যাপি এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের লক্ষ্য, মেলায় অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, প্রচারণা কৌশল, কর্মশালা/সেমিনার/আলোচনা সভা আয়োজন, মেলার ডকুমেন্টেশন ও রিপোর্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়।
কর্মশালায় জানানো হয়, ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট সপ্তাহ ২০১৫ আয়োজনে দেশের সেরা ১০ উপজেলাকে ‘সেরা ডিজিটাল মেলা ও ইন্টারনেট সপ্তাহ আয়োজক’ ও ব্যক্তি পর্যায়ে ‘সেরা ইন্টারনেট লিডার’ শীর্ষক জাতীয় স্বীকৃতি সনদ দেওয়া হবে। ইন্টারনেট লিডারশীপ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ‘সেরা ইন্টারনেট লিডার’ নির্বাচিত হবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বনানী মাঠে, ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর নানকিন বাজারে ও ১১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সিটি ইনডোর স্টেডিয়ামে বৃহৎ পরিসরে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক আয়োজন করা হবে। এছাড়া ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় সকল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের অংশগ্রহণে একযোগে এই উৎসব পালন করা হবে।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটwww.bangladeshinternet.org ও ফেসবুক পেইজ http://www.facebook.com/BDInternetWeek থেকে এই উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস